Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশের কৃষিপণ্যে রপ্তানি বাড়াতে করণীয়

ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশের কৃষিপণ্যে রপ্তানি বাড়াতে করণীয়
মোঃ সাইফুল কামাল আজাদ
বাংলাদেশ থেকে তাজা ফল ও শাকসবজি রপ্তানি দিন দিন বাড়ছে। কৃষির এই খাত থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরে রপ্তানি আয় ২০০ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর পরিসংখ্যান অনুসারে ২০০৮-০৯ সালে জাতীয় রপ্তানি আয়ে কৃষিপণ্যের অবদান ছিল ০.৭৮ শতাংশ, ২০২০-২১ সালে এটা দাঁড়ায় ২.৮৭ শতাংশে। অর্থাৎ কৃষিপণ্যের রপ্তানি বাজার ক্রমাগত  বিস্তৃত হচ্ছে এবং গত এক যুগে এখাত থেকে আয় প্রায় তিনগুণ বেড়েছে (সূত্র: রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, ২০২১)।  
কৃষিপণ্যের রপ্তানি ক্রমাগত বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা থেকে বোঝা যায় যে, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নিরাপদ খাদ্য সম্পর্কিত শর্তাবলি এবং বিপণনমান সঠিকভাবে নিশ্চিত করা গেলে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের তাজা ফল ও শাকসবজিসহ কৃষিপণ্যের রপ্তানি বাড়ানোর যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। ইউরোপের দেশগুলো হতে পারে বাংলাদেশের তাজা ফল ও শাকসবজি রপ্তানির বিশাল সম্ভাবনাময় বাজার। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে তাজাফল ও শাকসবজি ইউরোপে বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত বাঙালি কমিউনিটির বাজারেই শোভা পায়। তবে চেইনশপে তাজাফল ও শাকসবজি দেখা যায় না।  এটির অন্যতম কারণ চেইনশপ কর্তৃক নিরাপদ খাদ্য সম্পর্কিত বিশেষ শর্তারোপ ও আইনি বাধ্যবাধকতা এবং বিদেশী ক্রেতাদের উদ্দেশে পণ্য রপ্তানিতে রপ্তানিকারকদের অনাগ্রহতা। তবে ইউরোপের বাজারে কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে হলে সুগঠিত ও বিজ্ঞানভিত্তিক নিয়ন্ত্রণ-কাঠামো বা বিধিবিধান মেনে চলতে হয়। মানুষের ও উদ্ভিদের স্বাস্থ্য এবং ভোক্তার স্বার্থ সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এসব আইনি কাঠামো প্রণীত হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নে নিরাপদ খাদ্য সম্পর্কিত মানদ- এবং বিপণনের মান সম্পর্কে বাংলাদেশের কৃষক থেকে শুরু করে রপ্তানিকারকদের পর্যাপ্ত জ্ঞান না থাকাই ইউরোপের বাজারে কৃষিপণ্য রপ্তানির একটি অন্যতম বাধা। ফলে তাদের জন্য ইউরোপের বাজারে কৃষিপণ্য রপ্তানির সুযোগ সীমিত হয়ে পড়ে।
বাংলাদেশ হতে ইউরোপের দেশসমূহের নিকট শাকসবজি রপ্তানি করতে হলে এ খাতের সাথে জড়িত সকল উৎপাদনকারী, মধ্যস্বত্বভোগী, বিপণনকারী এবং রপ্তানিকারককে অবশ্যই ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ) দ্বারা স্বীকৃত খাদ্যপণ্য (ফল ও শাকসবজি) নীতির মানদ- পূরণ করতে হবে। উল্লেখ্য, প্রবিধান (ইসি) নং ১৭৮/২০০২ এর অনুচ্ছেদ  ১১ নির্দেশনা অনুসারে, ইউরোপের দেশসমূহে খাদ্যপণ্য (ফল ও শাকসবজি) রপ্তানি করার জন্য রপ্তানিকারককে অবশ্যই ইইউ নিজস্ব খাদ্য আইন বা শর্ত মেনে চলতে হবে, অথবা যদি নিজ দেশের সাথে অন্য কোন দেশের সুনির্দিষ্ট কোন দ্বিপক্ষীয় বা বহুপক্ষীয় চুক্তি থেকে থাকে, তবে সে চুক্তি বা বিধি অনুযায়ী খাদ্যপণ্য (ফল ও শাকসবজি) রপ্তানি করতে হবে।
ইউরোপের বাজারে তাজা ফল ও শাকসবজি রপ্তানির ক্ষেত্রে ঐ সমস্ত দেশের নিরাপদ খাদ্য আইনের সাথে সংগতিপূর্ণ  হওয়া বাঞ্ছনীয়। প্রাথমিক উৎপাদন থেকে শুরু করে খাদ্য-শৃঙ্খলের প্রতিটি ধাপে খাদ্যের নিরাপদতা নিশ্চিত করা, রপ্তানির  আগ-মুহূর্ত পর্যন্ত উদ্ভিদগত মৌলিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, তাজা ফল ও শাকসবজি রপ্তানি করা পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে বিপত্তি বিশ্লেষণ ও সংকটপূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ধাপ (প্রসেসিংয়ের জন্য) নীতির বাস্তবায়ন করা, রপ্তানিকারকের রপ্তানির জন্য নিবন্ধন গ্রহণ বা অনুমোদন নেয়া এবং তাজা ফল ও শাকসবজির উৎস সঠিকভাবে শনাক্তকরণের পদ্ধতি অনুসরণ করা অতীব গুরুত্বপূর্ণ।
প্রবিধান (ইসি) নং ১৭৮/২০০২ এর অনুচ্ছেদ ১৭ নির্দেশনা অনুসারে, বাংলাদেশ হতে ইউরোপের দেশসমূহে তাজা ফল ও শাকসবজি রপ্তানির ক্ষেত্রে রপ্তানিকারককে অবশ্যই খাদ্যপণ্য (ফল ও শাকসবজি) উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ, মোড়কীকরণ এবং বিতরণসহ খাদ্য সরবারহ শৃঙ্খলের সকল ক্ষেত্রে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ) নিজস্ব নিরাপদ খাদ্য আইন এবং নীতিসমূহ পূরণ করে কি না, তা যাচাই করতে হবে।
ইউরোপের বাজারে তাজা ফল ও শাকসবজি রপ্তানির ক্ষেত্রে রপ্তানিকারকদের নিম্নলিখিত নিরাপদ খাদ্য নীতিসমূহ মেনে চলতে হবে: ফল ও শাকসবজি প্রাথমিক উৎপাদন থেকে শুরু করে ভোক্তার পাত পর্যন্ত সম্পূর্ণ খাদ্য চেইনে বা সরবরাহ শৃঙ্খলে (“ফার্ম টু ফোর্ক” পদ্ধতি) খাদ্য নিরাপদতা নিশ্চিত করা; ফল ও শাকসবজি উৎপাদন থেকে শুরু করে (প্রাথমিক উৎপাদন বাদে) রপ্তানীকরণ পর্যন্ত ঝুঁকি বিশ্লেষণ এবং সংকটপূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ধাপ (ঐঅঈঈচ) নীতির সাধারণ বাস্তবায়ন করা; ফল ও শাকসবজি উৎপাদন থেকে শুরু করে রপ্তানিকরণ পর্যন্ত প্রয়োজনীয় উদ্ভিদগত মৌলিক সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা; খাদ্য প্রতিষ্ঠান বা রপ্তানিকারকের রপ্তানির জন্য নিবন্ধন গ্রহণ করা বা অনুমোদন নেওয়া; খাদ্যোপণ্যের (ফল ও শাকসবজি) সঠিক উৎস শনাক্তকরণ (ঞৎধপবধনরষরঃু) পদ্ধতি অনুসরণ করা;
কৃষকরাই মূলত তাজা ফল ও শাকসবজি উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
একজন কৃষক, প্রক্রিয়াজাতকারী, বিতরণকারী বা রপ্তানিকারকে ফল ও শাকসবজির প্রাথমিক উৎপাদন থেকে শুরু করে ভোক্তার নিকট পৌঁছানোর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত সম্পূর্ণ খাদ্য শৃঙ্খলে খাদ্যের নিরাপদতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে খাদ্য বিপত্তির বা ঝুঁকির (রাসায়নিক, অণুজৈবিক এবং ভৌতগত বিপত্তি) যেকোনো উৎস যেমন: বায়ু, মাটি, পানি, সার, খাদ্য, রাসায়নিক, শ্রমিকের স্বাস্থ্যবিধি, স্টোরেজ, হ্যান্ডলিং, বর্জ্য নিষ্পত্তি ইত্যাদি থেকে পণ্যেকে দূষণমুক্ত করার উদ্দেশ্যে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। রপ্তানিকারকদেরকে সর্বদা উত্তম কৃষি চর্চা (এঅচ)-এর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপসমূহ সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে কিনা তা যাচাই করার জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে। জনস্বাস্থ্য সুরাক্ষায় খাদ্য পণ্যে দূষক বা বিষাক্ত পদার্থের উপস্থিতি গ্রহণযোগ্য মাত্রার ভেতর রাখা অপরিহার্য। রপ্তানিকারকের খাদ্য গ্রহণের সাথে সম্পর্কিত ঝুঁকি বিবেচনা করত এবং উত্তম কৃষি চর্চা অনুশীলনের মাধ্যমে দূষক যা বিষাক্ত পদার্থের উপস্থিতি সর্বোচ্চ গ্রহণযোগ্য মাত্রা কঠোরভাবে বজায় রাখতে হবে।
স্বাস্থ্য এবং পরিবেশগত ঝুঁকি এড়াতে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন খাদ্য পণ্যে এবং কীটনাশকের জন্য সর্বাধিক অবশিষ্টাংশের মাত্রা (গজখং) নির্ধারণ করেছে। ইউরোপী নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ প্রতিনিয়ত পণ্যের কীটনাশকের সর্বাধিক অবশিষ্টাংশের মাত্রাগুলো হালনাগাদ করে থাকে। একজন রপ্তানিকারকে ইউরোপের দেশসমূহে পণ্য রপ্তানি করার পূর্বে অবশ্যই ইউরোপীয় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে কীটনাশকের সর্বাধিক অবশিষ্টাংশের হালনাগাদ অনুসরণ করার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে। ইউরোপীয় দেশসমূহে শাকসবজির প্তানির উদ্দেশ্যে যে কোনো খাদ্য পণ্যের জন্য ইইউ প্রবিধান নং ১১৬৯/২০১১ অনুযায়ী উক্ত খাদ্য পণ্যের প্রয়োজনীয় তথ্য থাকতে হবে। এই প্রবিধানমালা অনুযায়ী পণ্যের লেবেল ভোক্তাদের জন্য সঠিক তথ্য প্রদানের নিয়ম প্রতিষ্ঠা করতে হবে। রপ্তানিকারককে খাদ্য পণ্যের সাপ্লাই চেইনের সকল পর্যায়ে ভোক্তাদের কাছে যথাযথ খাদ্য তথ্য সরবরাহ করা একান্ত প্রযোজ্য। ইইউতে রপ্তানি করার জন্য ব্যবসায়ীদেরকে অবশ্যই ইইউ-এর গন্তব্যের দেশের একটি ভাষায় লেবেল করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় খাদ্য তথ্য উল্লিখিত থাকতে হবে। খাদ্য তথ্য যেন ভুল না হয় এবং ভোক্তাকে বিভ্রান্ত না করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। লট মার্কিং প্রতিটি ক্ষেত্রে উৎপাদক, প্রস্তুতকারক বা খাদ্যসামগ্রী প্যাকেজকারী বা ইইউ-এর দ্বারা প্রতিষ্ঠিত প্রথম বিক্রেতার দ্বারা নির্ধারিত হতে হবে।
প্রাথমিক উৎপাদনকারীদেরকে ফল ও শাকসবজি উৎপাদনের সময় নি¤েœাক্ত স্বাস্থ্যবিধি বিধানসমূহ প্রতিপালন করতে হবে -পণ্যকে পারস্পরিক দূষণের হাত থেকে রক্ষা করা; রাসায়নিক, অনুজৈবিক এবং ভৌতগত বিপত্তি বা ঝুঁকির যথাযথ নিয়ন্ত্রণ করা; পণ্য সংরক্ষণের স্থান, সরঞ্জাম, পাত্র, ক্রেট, যানবাহন ইত্যাদি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা; উদ্ভিদজাত পণ্যের উৎপাদন, পরিবহন, সংরক্ষণ এবং পরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রে সঠিক স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা; পারস্পারিক দূষণ প্রতিরোধ করার জন্য প্রয়োজনে পানীয় জল বা পরিষ্কার জল ব্যবহার করা; পারস্পারিক দূষণ প্রতিরোধ করার জন্য প্রাণী এবং কীটপতঙ্গ প্রতিরোধ করা; বর্জ্য এবং বিপজ্জনক পদার্থ (কীটনাশকসহ) এর সঠিক সংরক্ষণ এবং পরিচালনা করা যাতে পারস্পরিক দূষণ প্রতিরোধ করা যায়; কীটনাশক ও বায়োসাইডের সঠিক ব্যবহার; খাদ্য বিপত্তিসমূহ নিয়ন্ত্রণের জন্য যথাযথ পদক্ষেপগুলো একটি উপযুক্ত সময়ের জন্য তথ্য বা ডাটা রেকর্ড রাখা এবং নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সংরক্ষণ করা (ফল বা শাকসবজির ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৬ মাস পর্যন্ত তথ্য সংরক্ষণ করতে হবে); রপ্তানিকারকদেরকে ফল বা শাকসবজির ক্ষেত্রে কীটনাশক বা বায়োসাইডের কোনো ব্যবহার, কোনো কীট বা রোগের উপস্থিতি, মানব স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিশ্লেষণের ফলাফলের রেকর্ড রাখতে হবে।
বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য তাজা ফল ও শাকসবজি রপ্তানির সাথে জড়িত যেকোন প্রতিষ্ঠান ফিড দ্য ফিউচার বাংলাদেশ ট্রেড অ্যাক্টিভিটি প্রকেজেক্টের সাথে যোগাযোগ করে ইজি এক্সেপোর্ট সিরিজ প্রকাশনাটি গ্রহণ করতে পারবেন। তাছাড়া রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ওয়েবসাইটে প্রকাশনাটি পাওয়া যাবে। অবশেষে রপ্তানির সাথে জড়িত সকলের সার্বিক সাফল্য কামনা করি।

লেখক: ফুড সেফটি এক্সপোর্ট পাবলিকেশন স্পেশালিস্ট, ইউএসএআইডি ফিড দ্য ফিউচার বাংলাদেশ ট্রেড অ্যাক্টিভিটি, মোবাইল: ০১৬১৩০৪১৮৭০, ই-মেইল : ihasan@trade-bee.com.bd


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon